• রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন

ইন্টারনেট বন্ধে কারা জড়িত, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চান উপদেষ্টা

আবিদুর রহমান সুমন / ১৮৩ Time View
Update : রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার সঙ্গে কারা জড়িত, তা জানতে চান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এ জন্য ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন তিনি। এ সময়ের মধ্যে তাঁর কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব মুশফিকুর রহমানকে নির্দেশ দেন।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর আজ রোববার প্রথম কার্যদিবসে সকাল ১০টায় সচিবালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে যান উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে উঠে আসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়টি। এ সময় তিনি বলেন, ইন্টারনেট বন্ধ করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন। আন্দোলনের সময় মানবাধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৭ জুলাই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট ও ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় শেখ হাসিনা সরকার। পাঁচ দিনের মাথায় ২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত পরিসরে চালু করা হয় এবং ১০ দিন পর ২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট চালু হয়।

এরপর ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন ঘিরে আবারও সরকারের নির্দেশে মোবাইল অপারেটররা দেশজুড়ে ফোর-জি নেটওয়ার্ক সেবা বন্ধ করে দেয়।

আজকের বৈঠকে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, কার নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়, তা বের করতে হবে। মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির কোন কোন কর্মকর্তা অতি উৎসাহী হয়ে ইন্টারনেট বন্ধে সহযোগিতা করেছেন, তা-ও খতিয়ে দেখতে হবে। তদন্ত করতে ২৪ ঘণ্টা সময় দেন তিনি।

মতবিনিময় সভার শুরুতে  ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা
মতবিনিময় সভার শুরুতে  ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাছবি: প্রথম আলো

নাহিদ ইসলাম বলেন, ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে অনেক তথ্যই জানা সম্ভব হয়নি। কত মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, তা জানা যায়নি।

উপদেষ্টার নির্দেশের পরপরই ইন্টারনেট বন্ধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (টেলিকম) এ কে এম আমিরুল ইসলামকে কমিটির প্রধান করা হয়। কমিটি গঠনের পর সদস্যরা যান রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিটিআরসি ভবনে। সেখানে তাঁরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

কমিটির এক সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আগামীকালের মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন উপদেষ্টার কাছে তুলে দেবেন। পরে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেবেন।

বৈঠকে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, দেশে ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম অনেক বেশি। তিনি ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম কমাতে মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। বৈঠকে তিনি বলেন, দেশের কোথাও কোথাও এখনো মোবাইল নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক হয়নি। মোবাইল নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক করারও নির্দেশ দেন তিনি।

বৈঠকে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, আমলাতন্ত্র থাকবে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত। আইনের মধ্যে থেকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে আমলাদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার ত্যাগ ও রক্তদানের মধ্য দিয়ে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার যে সুযোগ তৈরি  হয়েছে, কর্মকর্তারা সেটি যেন কাজে লাগান। তিনি চান, কর্মকর্তারা যাতে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কাঠামোগত সংস্কার করেন। যে সংস্কারের মধ্য দিয়ে দেশ দীর্ঘ মেয়াদে সুফল পাবে। নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, এখন থেকে মন্ত্রণালয় চলবে মেধাভিত্তিক। দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।

মতবিনিময় সভার শুরুতে মন্ত্রণালয়ের সচিব মুশফিকুর রহমান উপদেষ্টাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সংস্থা থেকে ফুল দিতে চাইলে তিনি তা নেননি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category