দুধ দিয়ে গোসল করে আওয়ামী লীগের দল ত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার এক ইউপি চেয়ারম্যান। দল ত্যাগ করা ওই নেতার নাম কামরুজ্জামান মাসুদ।
শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে দল ত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। পরে নিজেকে পবিত্র করতে বাড়ির ছাদে গিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করেন।
কামরুজ্জামান মাসুদ দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
দুধ দিয়ে গোসল করা কালে মাসুদ বলেন, সাম্প্রতিক আ.লীগের কর্মকাণ্ডে আমি অতিষ্ঠ। তারা সন্ত্রাস বাহিনী ও পুলিশ দিয়ে নির্বিচারে নিরীহ ছাত্র ও সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে। তারা আয়নাঘর বানিয়ে দিনের পর দিন নিরপরাধ মানুষকে গুম করে রেখেছে। আমি এই দল করে লজ্জিত।
তিনি আরও বলেন, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জনগণের ভোটে ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি, দলীয় চেয়ারম্যান নই।
গত ৪ আগস্ট আপনি ছাত্রদের ওপর ইট-পাটকেল কেন মেরেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কখনোই চাইনি ছাত্র-জনতার বিপক্ষে যেতে, গত ৪ আগস্ট দেবিদ্বার সদরে কী হবে তা আমি জানতাম না। আমাকে দলের সিনিয়র নেতারা ভুল বুঝিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে গেছে। তারা আমাকে বলেছেন, বাংলাদেশে যে-সব ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছে তাদের স্মরণে শোক র্যালি করা হবে। তাই দেবিদ্বার স্বাধীনতা চত্বরে শোক র্যালি ও শোক সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে গিয়ে দেখলাম ছাত্র-জনতার সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়িয়েছে। আমি দুই গ্রুপের মাঝখানে পড়ে গিয়েছিলাম, আমি কাউকে ইট-পাটকেল মারিনি। আ.লীগ চোরের দল আখ্যা দিয়ে মাসুদ আরও বলেন, সন্ত্রাস দুর্নীতিতে ভরপুর আ.লীগ, আমি এ দলকে ঘৃণা করি। আমি জীবনেও আর এই দলের নাম মুখে নেব না।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করে বলেন, আমি সব সময় চেয়েছি আমার এ ফতেহাবাদ ইউনিয়নবাসীর পক্ষে থাকার। তারা আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছেন। দীর্ঘদিন আমি আ.লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থেকে মামলা-হামলা ছাড়া কিছুই পাইনি। সব কিছু থেকে বারবার বঞ্চিত হয়েছি। আমি এ ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলাম কিন্তু তারা আমাকে দেয়নি। সবসময় একই দলের অন্য নেতাকর্মীদের হাতে হামলার শিকার হয়েছি। আমি স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।