• রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩১ পূর্বাহ্ন

১২ জেলার বন্যায় কাঁদছে সারা দেশ

আবিদুর রহমান সুমন / ১১২ Time View
Update : শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪

ভয়াবহ বন্যায় জীবন-মৃত্যুর মাঝখানে দিন কাটাচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। এখন পর্যন্ত বন্যায় প্লাবিত হয়েছে দেশের ১২ জেলা। এতে ৪৫ লাখ মানুষ মানবিক সংকটে পড়েছেন। বন্যার পরিধি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। বন্যাক্রান্ত ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালীর পরিস্থিতি বেশি অবনতি হয়েছে। সরকারি হিসাবে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত মারা গেছেন ১৫ জন। তাদের মধ্যে কুমিল্লায় ৪, ফেনীতে ১, চট্টগ্রামে ২, নোয়াখালীতে ১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, লক্ষ্মীপুরে ১ ও কক্সবাজারে ৩ জন মারা যান। বন্যাকবলিত মানুষ ত্রাণের চেয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার আকুতি জানাচ্ছেন বেশি।

এদিকে পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয়ের জন্য ৩ হাজার ১৬০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭৩৯ বন্যাদুর্গত মানুষ এবং ১৭ হাজার ৮৪৮টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসাসেবায় ৬৩৭টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে নৌযান ও অন্যান্য উদ্ধার যান দিয়ে পানিবন্দি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যক্তি উদ্যোগের সংগঠনগুলো তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে বন্যার্তদের উদ্ধারে কাজ করছে। সরকারও বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানোর পাশাপাশি নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে বন্যার্তদের উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চলছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা ফেনী। গত ৪০ বছরের মধ্যে এত ভয়াবহ বন্যা দেখেনি ফেনীবাসী। কয়েক লাখ মানুষ জীবন-মৃত্যুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে উদ্ধারের আকুতি জানাচ্ছেন। অথচ বৈরী আবহাওয়া ও পানি বাড়তে থাকায় তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বন্যার্তদের উদ্ধার করতে না পারলে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুর বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এসব জেলার ৬৫ উপজেলা ও ৪৯৫টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী জেলার বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে যোগাযোগের কিছু নম্বর জানিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সেগুলো হলো ফেনীর এনডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর আহমেদ (০১৭১৩১৮৭৩০৪), লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সাইফুল (০১৭৬৯৭৫৪১০৩) ও মেজর ফাহিম (০১৭৬৯৩৩৩১৯২)।

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ে পিএইচডি গবেষক আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ কালবেলাকে বলেন, মৌসুমি লঘুচাপটি বাংলাদেশের ওপর স্থায়ী হয়ে আছে। বুধবার বিকেলেও এ লঘুচাপটি চট্টগ্রামের অংশে অবস্থান করছিল, যা পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছিল না। এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত দেশের অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে খুবই স্ট্রংলি ম্যাডেন-জুলিয়ান অসিলেশন (এমজেও) অবস্থান করছে। ফলে সাগরে নিয়মিত গরম ও আর্দ্র বাতাস তৈরি হচ্ছে, যা উপকূলের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। মধ্য এশিয়ার উপরে ‘জেট স্ট্রিম’-এর অবস্থান রয়েছে। ফলে ভারতসহ বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category