• সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩১ অপরাহ্ন

২৮ অক্টোবরের খুনিদের বিচার ট্রাইব্যুনালে করতে হবে : হারুনুর রশিদ

আবিদুর রহমান সুমন / ৭০ Time View
Update : সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৪

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, ২৮ অক্টোবর জাতির জন্য এক দুঃখজনক দিন। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দেশপ্রেমিক নাগরিকদের সেদিন হত্যা করে এ দেশের সার্বভৌমত্ব বিলিয়ে দিয়েছিল। স্বাধীনতা রক্ষার জন্য এসব খুনির বিচার করতে হবে। প্রয়োজনে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে ফেডারেশনের উদ্যোগে শহীদ হাবিবুর রহমান ও শহীদ রহুল আমিনসহ সব শহীদ স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন ফেডারেশনের সহসভাপতি লস্কর মো. তসলিম, কবির আহমদ, মনসুর রহমান, সহসাধারণ সম্পাদক মো. মহিব্বুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান, দপ্তর সম্পাদক নুরুল আমিন প্রমুখ।

অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, ২৮ অক্টোবর শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীর ইতিহাসে কালো দিন। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার হুকুমে তার সন্ত্রাসীরা সেদিন আমাদের ভাইদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তারা সেদিন পশুর চাইতে নির্মমভাবে হত্যা করে। তারা শুধু হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি। তারা লাশের উপর উঠে উল্লাস করেছে। এই বর্বরতা পৃথিবীবাসী আর দেখেনি। তারা ২৭ অক্টোবর গাজীপুরে শ্রমিক কল্যাণের জেলা সভাপতি রহুল আমিনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এই হত্যা মামলাগুলোর আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারে এসে সর্বপ্রথম এ মামলাগুলো প্রত্যাহার করেছে। কারণ সে নিজেই এসব মামলার প্রধান আসামি। তাই নিজেকে বাঁচানোর পাশাপাশি ও অন্য খুনিদের রক্ষার জন্য মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবরের খুনিদের বিচার করার জন্য বর্তমান সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে খুনি হাসিনার বিচার করতে হবে। খুনিদের বিচার না করা হলে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। যা আমরা বিগত ১৫ বছরে দেখতে পেয়েছি। সুতরাং এই বিচারকে আর বিলম্বিত করা যাবে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিচার কাজ শুরু করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ খুনিদের যথাযথ বিচার দেখতে চায়।

লস্কর মো. তসলিম বলেন, ২৮ অক্টোবরের রক্তাক্ত দিনে প্রথম যে দুজন ভাই শহীদ হলেন তারা ছিলেন শ্রমিক। শ্রমিকরা যে আন্দোলন-সংগ্রামে সব সময় সামনের সারিতে থাকে এটাই তার প্রমাণ। আওয়ামী লীগের সেদিনের হামলা ছিল গভীর ষড়যন্ত্রের প্রথম ধাপ। তারা চেয়েছিল এদেশ থেকে ইসলামী আন্দোলন মুছে ফেলতে। ষড়যন্ত্র মোতাবেক তারা পল্টনসহ সারা দেশে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে।

কবির আহমদ বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা তার সন্ত্রাসীদের লগি বৈঠা নিয়ে ঢাকায় আসার নির্দেশ দিয়েছে। তার আহ্বান দেশের প্রতিটি মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে। তারা পল্টনে জড়ো হয়ে জামায়াতের সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। হামলা প্রতিরোধ না করে পুলিশ সেদিন নীরবতা অবলম্বন করেছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বারবার টেলিফোন করে সাহায্য চাওয়া হলেও তারা সাড়া দেয়নি। পুলিশের নীরবতার সুযোগে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা জামায়াতের নেতাকর্মীদের দিনে দুপুরে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনার ঘোষণা মোতাবেক আওয়ামী সন্ত্রাসী হাজী সেলিম, সাহারা খাতুন ও ডা. ইকবালের নেতৃত্বে হাজার হাজার সন্ত্রাসী বিনা উসকানিতে জামায়াতের সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। তাদের লক্ষ্য ছিল জামায়াতের সমাবেশ ভণ্ডুল করে দিয়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করা। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা তাদের হামলা জীবন দিয়ে রুখে দিয়েছে। তারা ২৮ অক্টোবর হত্যা করতে না পেরে পরবর্তীতে অবৈধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জামায়াত নেতাদের হত্যা করেছে।

তিনি বলেন, এই দেশে প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে শেখ হাসিনা। ২৮ অক্টোবর হামলার নির্দেশ দিয়ে সে মানবতাবিরোধী অপরাধের সূচনা করেছে। তার ধারাবাহিকতায় বিডিআর হত্যাকাণ্ড, সাঈদী হুজুরের রায়ের দিন ৩০০ মানুষকে হত্যা, শাপলা চত্বরে হেফাজতের নেতাকর্মীদের হত্যা ও সর্বশেষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দেড় হাজার মানুষকে হত্যা করেছে এই খুনি ফ্যাসিস্ট। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি- তাকে অবশ্যই দেশে এনে দ্রুত বিচার করতে হবে। একই সাথে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধ করতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category