যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের দাবানল: নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জ, ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বৃদ্ধি
লস অ্যাঞ্জেলসের দাবানল সাময়িকভাবে স্তিমিত হলেও আবারো তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভয়াবহ এই আগুনে এখন পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। দাবানল-আক্রান্ত প্যাসিফিক প্যালিসেইড এবং ইটন এলাকায় রাত্রীকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি, যারা নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন, তাদের এখনই ফিরে না আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে উদ্বেগ
মার্কিন আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, তীব্র বাতাসের পূর্বাভাস রয়েছে, যা আগুনের তীব্রতা বাড়িয়ে নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। ইতোমধ্যে ৪০ হাজার একরের বেশি এলাকা আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। ৪ লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অগ্নিনির্বাপণে চ্যালেঞ্জ
লস অ্যাঞ্জেলস ফায়ার ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, পর্যাপ্ত পানির অভাবের কারণে অগ্নি-প্রতিরোধ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। দমকল কর্মকর্তা অ্যাডাম ভ্যান গার্পেন বলেন, সরঞ্জাম ও জনবল সংকটও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দাবানলের সূত্রপাত ও ভৌগলিক প্রভাব
গত মঙ্গলবার লস অ্যাঞ্জেলেসের পাঁচটি স্থানে দাবানল শুরু হয়। শুক্রবার রাত পর্যন্ত এই পাঁচ স্থানে আগুন সক্রিয় ছিল। দুটি দাবানল লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের কাছাকাছি হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার বাড়িঘর ও যানবাহন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
দাবানল দ্রুত ছড়ানোর কারণ
দীর্ঘ খরা, ভারী বৃষ্টিপাতের পর শুষ্ক আবহাওয়া এবং শক্তিশালী স্যান্টা আনা বাতাস দাবানলকে ত্বরান্বিত করেছে। স্যান্টা আনা বাতাস—যা “ডেভিল উইন্ডস” নামেও পরিচিত—গাছপালা শুকিয়ে আগুন ছড়িয়ে দেয়। এই বাতাস মূলত যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলের গ্রেট বেসিন অঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার দিকে প্রবাহিত হয়।
জনবল ও সরঞ্জামের অভাব
দমকল কর্মীদের সংকট এবং যানজট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির ফায়ার চিফ জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তাদের যথেষ্ট দমকলকর্মী নেই।
ভূগোলের প্রভাব
স্থানীয় ভৌগলিক গঠন দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার একটি বড় কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। লস অ্যাঞ্জেলেসের পাহাড়ি ও শুকনো অঞ্চল দাবানলের বিস্তৃতিতে সহায়তা করছে।
দাবানলের ভয়াবহতা এবং এর প্রভাব মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সরঞ্জাম ও প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার কারণে চ্যালেঞ্জ বেড়েই চলেছে।