বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা না দিয়েও উত্তীর্ণ ছাত্রলীগ নেত্রী: তদন্তে কমিটি গঠন
পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ নেত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশীকে পাস করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ড. রুহুল আমিনকে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন।
এছাড়া, একই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ড. রুহুল আমিনকে আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কেন্দ্রে ‘এ’ ইউনিটের সমন্বয়ক পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ ও বিতর্ক
জানা গেছে, ড. রুহুল আমিন আওয়ামীপন্থি শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। ২০২১ সালে তিনি ‘বঙ্গবন্ধু জন্ম নিল সোনার বাংলায়’ শিরোনামে একটি মিউজিক ভিডিও তৈরি করেছিলেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশীকে তিনি বিশেষ সুবিধা দিয়েছেন।
গত বুধবার গণিত বিভাগের মাস্টার্স ১ম সেমিস্টারের ৫১০২ কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, ঐ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেও ছাত্রলীগ নেত্রী ঐশী উত্তীর্ণ হন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
তদন্ত কমিটি গঠন
ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে বুধবার রাতেই তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. তানজিউল ইসলামকে। সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. হান্নান মিয়া এবং সদস্য হিসেবে রয়েছেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াছ প্রামানিক। কমিটিকে দ্রুততম সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
ঘটনাটি নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্ষেত্রে নৈতিকতা ও স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলেছে। তদন্ত শেষে বিষয়টির চূড়ান্ত রায় কী হয়, তা নিয়ে সবার নজর এখন প্রশাসনের দিকে।