মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথমবারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করেছেন। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাণিজ্য, অভিবাসন এবং আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের পর এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে বাংলাদেশের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি জানতে চান, বাইডেন প্রশাসনের সময়ে মার্কিন ডিপ স্টেটের বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের ভূমিকা ছিল কি না এবং মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জুনিয়র সরোসের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে ট্রাম্পের মতামত কী।
এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, “এই বিষয়ে আমাদের ডিপ স্টেটের কোনো ভূমিকা ছিল না। প্রধানমন্ত্রী মোদী বহুদিন ধরে এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন, এবং সত্যি বলতে, এটি শত শত বছর ধরে আলোচনার বিষয়। তবে আমি এটি প্রধানমন্ত্রী মোদীর ওপর ছেড়ে দিচ্ছি।”
এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ভারতের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন মোদী। তিনি বলেন, “যুদ্ধ বন্ধে সম্ভাব্য সমাধান খোঁজার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্যোগকে আমি সমর্থন করি। আন্তর্জাতিক জনমত বলছে, ভারত এই যুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। তবে আমি পরিষ্কার করতে চাই, আমাদের ভূমিকা কখনোই নিরপেক্ষ ছিল না—আমরা সবসময় শান্তির পক্ষে ছিলাম।”
মোদি আরও বলেন, “আমার ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যে একটি মিল আছে—আমরা দুজনেই আমাদের দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিই।” ট্রাম্পও মোদীর প্রশংসা করে বলেন, “মোদি ভারতে অসাধারণ কাজ করছেন, এবং আমাদের মধ্যে চমৎকার বন্ধুত্ব রয়েছে।”
সম্প্রতি জাতিসংঘ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলন নিয়ে তৈরি ওই প্রতিবেদনে বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস হামলা এবং হতাহতের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে।
বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রতিবেদন প্রসঙ্গে বলেন, “শেখ হাসিনার সরকার ফ্যাসিবাদী ছিল। আমরা তাকে বাংলাদেশের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতকে অনুরোধ করছি।”
এদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, তারা ভারতের কাছে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য পুনরায় আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানাতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।