প্রেস সচিব বলেন, কাতার সরকার স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ থেকে ৭২৫ জন সৈন্য নিয়োগে সম্মতি জানিয়েছে। এরা তিন বছরের মেয়াদি চুক্তিতে নিয়োজিত থাকবেন এবং চুক্তির মেয়াদ শেষে নতুন ব্যাচ প্রেরণ করা হবে। ভবিষ্যতে এই সংখ্যা ১৬০০ জন বা তারও বেশি করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সামরিক সচিব ও এসএসএফ প্রধান এ বিষয়ে কাতার সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন।
নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সৈন্যদের প্রারম্ভিক মাসিক বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা। এটি প্রবাসী আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
আজ কাতারের জ্বালানি মন্ত্রীর সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে নেতৃত্ব দেবেন প্রধান উপদেষ্টা নিজেই। তাঁর সঙ্গে থাকবেন জ্বালানি উপদেষ্টা ড. ফজলুল কবির খান এবং জ্বালানি সচিব। কাতার বিশ্বের অন্যতম প্রধান এলএনজি রপ্তানিকারক দেশ হওয়ায়, বৈঠকে স্বল্পমূল্যে ও দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি আমদানির বিষয়ে অগ্রগতি আশা করা হচ্ছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৬০০ দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান নতুন গ্যাস সংযোগের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। দেশীয় গ্যাসের মজুদ কমে যাওয়ায় কাতার থেকে আমদানিকৃত এলএনজি শিল্প ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রেস সচিব আরও জানান, পূর্ববর্তী সরকারের রেখে যাওয়া কয়েকশ মিলিয়ন ডলারের দেনা বাংলাদেশ সরকার পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করছে। বর্তমানে প্রায় ৩৭ মিলিয়ন ডলার বকেয়া রয়েছে, যা চলতি সপ্তাহেই পরিশোধের পরিকল্পনা রয়েছে। এতে বাংলাদেশ-কাতার কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত হবে এবং পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি পাবে।
প্রধান উপদেষ্টা বর্তমানে দোহায় অনুষ্ঠিত “আর্থনা সামিটে” অংশ নিচ্ছেন। উদ্বোধনী পর্বে তাঁর ২০ মিনিটব্যাপী বক্তৃতায় তিনি মাইক্রোক্রেডিট ও সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়নের উপায় নিয়ে আলোকপাত করেন। একই সেশনে বক্তব্য রাখেন কাতার ফাউন্ডেশনের প্রধান শাইখা হিন্দ বিন হামাদ আল থানি, ব্রিটিশ অভিনেতা ও সমাজকর্মী ইদ্রিস এলবা এবং কাতারের একজন মন্ত্রী।
সামিটের উদ্বোধনী পর্বের পর প্রধান উপদেষ্টা কাতারের শাসক শেখ তামিম আল হামাদ আল থানির মা এবং প্রভাবশালী নারী শাইখা মোজার সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে শাইখা হিন্দও উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠক দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার সম্ভাবনা জাগিয়েছে।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “এই সফর শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নয়, বরং বাংলাদেশকে একটি আর্ন্তজাতিক অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠার দিকেও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”