বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু কর্মচারী পরিষদের সভাপতি ও প্রকৌশল শাখার প্ল্যাম্বার জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করার জন্য রেড সেল গঠন করেছিল কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগ। গত ৪ আগস্ট শিক্ষার্থীরা কুমিল্লা কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মিছিল করলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ তাদের ওপর ওপেন ফায়ার ও লাঠিচার্জ করে।
ওই মিছিলে দেশীয় অস্ত্র হাতে শিক্ষার্থীদের মারধর এবং ৩ আগস্ট বিজয়পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মিটিং করে শিক্ষার্থীদের দমন করার পরিকল্পনা করেন। এমন একটা ভিডিও কালবেলার হাতে এসেছে।
মিটিংয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, কোটা আন্দোলনের নামে বিএনপি, জামায়াত-শিবির দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। তারা জ্বালাও-পোড়াও ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। এই কাজ করার সাহস পাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি না থাকার কারণে। প্রতি সেকশনে যদি ১২০০ স্টুডেন্ট ভর্তি হয় আর প্রতি বছরে যদি আমরা ১০০ ছাত্রলীগ সৃষ্টি করতে পারি তাহলে ১০০ ছাত্রলীগ পাঁচ বছরে ৫০০ ছাত্রলীগ নেতা সৃষ্টি করতে পারবে। আর ৫০০ ছাত্রলীগের দুজন করে কর্মী হলে হাজার-পনেরোশ নেতা আমাদের ক্যাম্পাসে থাকত। এই পনেরোশ নেতা যদি বাধা দিত শিক্ষার্থীরা বিশ্বরোডে আসতে পারত না
এ বিষয়ে জসিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো আমার নামে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আমি কখনো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলাম না। ভিডিও সম্পর্কে তিনি বলেন, এগুলো ফেক ভিডিও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গোলাম মোস্তফা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের গুন্ডারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মারধর করেন এবং জসিমকেও শিক্ষার্থীদের মারধর করতে দেখা যায়।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন এর ৪৩ এর ৪ ধারায় উল্লেখ আছে, কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না। তিনি সংবিধান পরিপন্থি করে স্থানীয় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ আছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রলীগের সমন্বয়ক পাবেল রানা বলেন, যে শিক্ষক কর্মকর্তা বা কর্মচারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গিয়ে আন্দোলনে বাধা দিয়েছে তাদের আমরা ক্যাম্পাসে চাই না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি। না হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবার আন্দোলন গড়ে তুলবে।