পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দ্রুত বদলে যাচ্ছে সৌদি আরব। ইসলাম ধর্মের আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত সৌদি আরব এখন পশ্চিমা সংস্কৃতি আমদানিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এ জন্য দেশের ভেতর গান-বাজনা থেকে শুরু করে সিনেমা হল বানানোয় মনোযোগী হয়ে উঠেছে সৌদি আরব। তবে সম্প্রতি একজন সৌদি ইঞ্জিনিয়ারের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এরপর ওই সিনেমা হল নির্মাণ নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
সৌদি আরবে ক্রাউন প্রিন্সের ‘কার্যত’ শাসক হয়ে ওঠার পর দেশকে আমূলে বদলে ফেলার পণ করেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
এ জন্য সৌদি সমাজের প্রচলিত নিয়মকানুনকে গোঁড়ামি আখ্যা দিয়ে তা সংস্কারে উঠেপড়ে লাগেন তিনি। অর্থনীতি নিয়েও তাক লাগানোর মতো বড় ধরনের পরিকল্পনা করেন যুবরাজ মোহাম্মদ। এমনকি এত দিন নিষিদ্ধ হিসেবে বিবেচিত হওয়া অনেক কিছুই এখন সৌদি আরবে বৈধতা পেয়েছে।
তবে সম্প্রতি একটি সিনেমা হলের নির্মাণ নিয়ে তৈরি হয়েছে তুমুল বিতর্ক। সৌদি আরবের একজন ইঞ্জিনিয়ার এক্সে এ নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করার পর আলোচনা তুঙ্গে ওঠে। ভিডিওতে ওই ইঞ্জিনিয়ার দাবি করেন, ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে পবিত্রতম স্থান পবিত্র কাবাঘরের একেবারে কাছাকাছি এত বড় বিনোদন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সৌদি সরকার।
স্মার্ট মক্কা গড়ে তোলার যে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সৌদি সরকার, তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সিনেমা। সৌদি সরকার বলছে, আধুনিক বিনোদন ব্যবস্থাকে ধর্মীয় গুরুত্বের সঙ্গে মিল রেখে সমন্বয় করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সৌদি এন্টারটেইনমেন্ট ভেঞ্চারস, এটি সৌদির পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। ২০২৩ সালে সৌদি এন্টারটেইনমেন্ট ভেঞ্চারসকে ২৫০ কোটি ডলারের বিভিন্ন প্রজেক্ট দেওয়া হয়।
মক্কা সিনেমা প্রজেক্টের মূল্য ১৩০ কোটি সৌদি রিয়াল। স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান মডার্ন বিল্ডিং লিডারস এই প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছে। পবিত্র কাবা মসজিদ কমপ্লেক্সের ঠিক বাইরে উম আল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আল আবিদিয়াহ জেলায় এই সিনেমা প্রজেক্ট তৈরি করা হচ্ছে। এই প্রজেক্টর এরিয়ার পরিধি ৮০ হাজার স্কয়ার মিটার। দেশটিতে সিনেমা হল নির্মাণকে উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক পরিবর্তন হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে।
দীর্ঘ চার দশক ধরে সৌদি আরবে সিনেমা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় সৌদি সরকার। দেশটির তরুণ যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যে ভিশন ২০৩০ হাতে নিয়েছেন, তার অংশ হিসেবেই সৌদি আরবের সমাজকে পশ্চিমাদের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আসতেও বিভিন্ন প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে সৌদি আরব।