• শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

সীমান্তের ওপারে তীব্র সংঘাতের খবর, আকাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলী

আবিদুর রহমান সুমন / ৮৯ Time View
Update : বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে জান্তা সরকার বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) তুমুল যুদ্ধ চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সীমান্তের একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, ছয় মাসের মধ্যে তিন–চার দিন ধরে সবচেয়ে বড় ধরনের সংঘাত চলছে। দুই পক্ষের এই যুদ্ধে মর্টারশেলের পাশাপাশি ড্রোন হামলাও চলছে বলে জানা গেছে। আরাকান আর্মির সম্ভাব্য অবস্থান লক্ষ্য করে আর্টিলারি ও মিসাইল ছুড়ছে সেনাবাহিনী।

টানা কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হয় দুই পক্ষের এই যুদ্ধ। গত সোমবার বিকেল পাঁচটা থেকে আজ বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে অনেক। আকাশে ছড়িয়ে পড়া আগুনের লেলিহান শিখা ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী টেকনাফ সীমান্ত থেকেও দেখা যাচ্ছে।

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা ছয় মাসের বেশি সময় ধরে রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়ছে আরাকান আর্মি। ইতিমধ্যে আরাকান আর্মি মংডু টাউনশিপের আশপাশে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ২৫টি সীমান্তচৌকি, রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপের বেশ কয়েকটি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে। মাসখানেক ধরে মংডু টাউন এবং পাশের পাঁচটি গ্রাম সুধাপাড়া, মংনিপাড়া, সিকদারপাড়া, উকিলপাড়া, নুরুল্লাপাড়া দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে আরাকান আর্মি। গ্রামগুলো রোহিঙ্গা অধ্যুষিত। গ্রামগুলোর বিপরীতে (পশ্চিমে) নাফ নদীর এপারে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন।

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, গতকাল রাতে আরাকান আর্মি মংডু টাউনশিপের আশপাশের পাঁচটি গ্রাম সুধাপাড়া, মংনিপাড়া, সিকদারপাড়া, উকিলপাড়া দখল করে নেয়। মর্টার শেল ও ড্রোন হামলা চালিয়ে গ্রামগুলো থেকে লোকজনকে উচ্ছেদ করা হয়। তাতে অনেকে হতাহত হন। গভীর রাতে আরাকান আর্মি মংডুর টাউনের অভ্যন্তরে থাকা সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির পৃথক দুটি ব্যাটালিয়নকে চারদিক থেকে ঘেরাও করে রেখেছে বলে জানা গেছে। সেনা ও বিজিপি সদস্যরা আরাকান আর্মির অবস্থান লক্ষ্য করে ছুড়ছে মর্টার শেল, আর্টিলারি ও মিসাইল।

রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ, সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি নাফ নদীতে টহল জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ড বাহিনী। বিজিবি বলছে, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত আছে। বাংলাদেশ সীমানায় কোনোভাবে সন্ত্রাসী কিংবা বিদেশিদের অনুপ্রবেশ ঘটবে দেওয়া হবে না।

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে টেকনাফ সীমান্তে বিজিবির টহল। আজ সকালে তোলাছবি: প্রথম আলো

টেকনাফের সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে মংডুতে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে। যুদ্ধে মর্টারশেলের পাশাপাশি উভয় পক্ষ ড্রোন ও মিসাইল ব্যবহার করছে। তাতে লোকজনের ঘরবাড়িতে আগুন ধরে যাচ্ছে। এপার থেকে ওপারের আগুনের ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। ওপারের শক্তিশালী বিস্ফোরণে টেকনাফের সাবরাং, টেকনাফ সদর ও হ্নীলা ইউনিয়নের অন্তত ২৩টি গ্রাম কাঁপছে। আতঙ্কে হাজারো নারী শিশু। প্রাণহানির আশঙ্কায় ছয় মাসের বেশি সময় ধরে টেকনাফের অন্তত ১০ হাজার জেলে নাফ নদীতে মাছ শিকারে নামতে পারছেন না। তবে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ড টহল বাড়িয়েছে। এ কারণে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটছে না।

বর্তমানে উখিয়া-টেকনাফের ৩৩ আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। গত সাত বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যায়নি। এর মধ্যে আরও রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্ত দিয়ে কাউকে অনুপ্রবেশের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। অনুপ্রবেশের সময় বেশি কিছু রোহিঙ্গাকে নাফ নদী থেকে পুনরায়


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category