• রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন

সরকারি খরচে রাশিয়া থেকে ডিগ্রি নিয়েও রূপপুরে চাকরি হয়নি ৪৪ জনের

আবিদুর রহমান সুমন / ৮৭ Time View
Update : শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য দক্ষ জনবল তৈরি করতে কয়েকটি ধাপে শিক্ষার্থীদের রাশিয়া পড়তে পাঠিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এভাবে ৯১ জন সরকারি খরচে রাশিয়া থেকে ডিগ্রি নিয়ে ফিরলেও শেষপর্যন্ত চাকরি পাননি ৪৪ জন। কর্তৃপক্ষ বলছে, পরীক্ষায় যোগ্যতার ভিত্তিতে মেধাবীরা চাকরি পেয়েছেন। তবে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, তাঁদের যথাযথ সুযোগ দেওয়া হয়নি।

চাকরিবঞ্চিতদের পক্ষ থেকে তিনজন গত ১৫ আগস্ট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে ওই বিষয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়, রাশিয়া থেকে পাস করে এসে রূপপুরে নিয়োগ কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতায় ন্যায্য নিয়োগ থেকে বঞ্চিত এ প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

এ চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডে (এনপিসিবিএল)।

পরমাণু শক্তি কমিশন কর্তৃপক্ষ বলছে, ওই শিক্ষার্থীদের সরকারি শিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে রাশিয়া পাঠানো হয়েছিল। তবে তাঁদের কাউকে চাকরির নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। চাকরি পেতে নিয়োগ পরীক্ষার প্রতিযোগিতায় মেধার প্রমাণ দিতে হবে। এভাবে (প্রতিযোগিতা ছাড়া) শুরুর দিকে অনেকেই চাকরি পেয়েছেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাশিয়া থেকে ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের প্রতিযোগিতা করতে হয়েছে। এতে কেউ কেউ বাদ পড়েছেন। বিদেশি ডিগ্রিধারী এসব শিক্ষার্থীকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেই সুযোগ তৈরির কথা ভাবছে কমিশন।

যথাযথ নিয়ম মেনে যোগ্যতার ভিত্তিতে রূপপুরে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে ফিরে আসাদের মধ্যে যাঁদের এখনো চাকরি হয়নি, ভবিষ্যতেও তাঁরা নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। মেধার ভিত্তিতেই নিয়োগ নিশ্চিত করা হবে।

মোহাম্মদ শৌকত আকবর, পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান

শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে ২০১৫ সাল থেকে রাশিয়া যেতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। বৃত্তির সময় তাঁদের ছয়টি শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়। এ শর্ত মেনে একটি চুক্তিনামাতেও স্বাক্ষর করেন শিক্ষার্থীরা। এতে বলা হয়, সব শর্ত যথাযথভাবে মেনে চললে ও চাকরিতে নিয়োগের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন করলে পরমাণু শক্তি কমিশন বা এনপিসিবিএলে তাঁদের নিয়োগ করা যেতে পারে। চাকরি পেলে অন্তত ৬ বছর তাঁদের এ চাকরি ছাড়া যাবে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, প্রথম ব্যাচে তিন বছরের মাস্টার্স করতে রাশিয়া যান ১২ জন, যাঁদের সবাই রূপপুরে চাকরি পেয়েছেন। দ্বিতীয় ব্যাচে যান ১৭ জন, যাঁদের মধ্যে ১৫ জন রূপপুরে চাকরি পান। তৃতীয় ব্যাচে যান ১৯ জন। তাঁদের মধ্যে ১০ জন নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত হলেও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার ছাড়পত্র না মেলায় ২ জন বাদ পড়েন। আবার চাকরি নিয়েও একজন পদত্যাগ করে চলে যান বিদেশে। চতুর্থ ব্যাচে ১৬ জন ডিগ্রি নিয়ে ফিরেছেন। তাঁদের মধ্যে ১৩ জন লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে অপেক্ষায় আছেন।

তৃতীয় ব্যাচে মাস্টার্স করে ২০২০ সালে দেশে ফিরে আসেন মো. রাসেদুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ২০২১ সালে চতুর্থ ব্যাচ দেশে ফেরার পর দুই ব্যাচ একসঙ্গে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া হয়। মৌখিক পরীক্ষায় তাঁকে বাদ দেওয়া হয়। দুজন বাদ পড়েছেন গোয়েন্দা ছাড়পত্র না পাওয়ায়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category