আগামী দু-এক দিনের মধ্যে অনেক বড় কোনো সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে বলে আভাস দিয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, আমি খুবই ভাগ্যবান যে আমি একটা গ্রেট টিম পেয়েছি। আমরা কিছু রোমাঞ্চকর এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছি। আপনারা হয়তো আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে বড় কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানতে পারবেন।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, আমি বাইরে থেকে জানতাম যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় একটি ঘুমন্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু ভেতরে তো এসে দেখি এখানে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে।
তিনি বলেন, এখানে আমার আসার মূল কারণ হচ্ছে নতুন বাংলাদেশের কী ন্যারেটিভ আমরা নির্মাণ করবো, তা ঠিক করা। ন্যারেটিভ কথা দিয়ে নির্মাণ হবে না; নির্মাণ হবে চলচ্চিত্র দিয়ে, থিয়েটার দিয়ে, গান দিয়ে, এসব দিয়ে।
সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, আমার চোখে কখনো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাজ চোখে পড়েনি। অনুষ্ঠান করতো খুব। একটা ন্যারেটিভ চেঞ্জ করা, মানুষের মাথায় একটা নতুন গল্প তৈরি করা- এটা আমি খুব একটা দেখিনি। আমি এসে দেখলাম যে, ব্যাপক সুযোগ আছে।
তিনি আরও বলেন, আমি একটা কথা বলেছি, আইনকানুনের ব্যাপারটা আপনারা দেখবেন। আমরা কেউ কোনদিন যেন আইনের বাইরে না যাই। আইনের মধ্যে থেকে আমি যে স্বপ্নগুলো দেখছি, এটা কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, আপনারা আমাকে বলেন। আমি আমার মন্ত্রণালয়ের প্রত্যেকের কাছ থেকে ভালো সমর্থন পাচ্ছি।
দায়িত্ব নিয়ে এখন কী কী বিষয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন- এ বিষয়ে ফারুকী বলেন, কাল বা পরশুর মধ্যে আপনারা অনেক বড় কিছু জানতে পারবেন। আমার অগ্রাধিকার হচ্ছে, আমরা এমন একটা বাংলাদেশের ন্যারেটিভ তৈরি করতে চাই যে, বাংলাদেশে বহু ধর্ম, বহু ভাষা, বহু জাতিগোষ্ঠী এক জায়গায় থাকে। আমাদের একটা সম্প্রীতির কথা বলে এবং আমাদের সম্পর্কে যে নানা উল্টাপাল্টা ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে বাইরে, সেই ন্যারেটিভগুলো স্ট্রংলি কাউন্টার করাটা আমার কাজ।
এরপর তিনি বলেন, গত ১৫ বছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চাদরে ঢেকে দুঃশাসনকে জায়েজ করা হয়েছে, গুম-খুনকে জায়েজ করা হয়েছে, ব্যাংক লুটকে জায়েজ করা হয়েছে! এখন আর ১০ কোটি টাকার কোনো খেলা নেই, দুর্নীতি সব হাজার কোটি টাকা থেকে শুরু হয়। এই গল্পগুলো শুধু দেশের মানুষ নয়, দেশের বাইরেও তুলে ধরতে হবে। আমার দ্বিতীয় প্রধান কাজ এটা।
ফারুকী আরও বলেন, এই দুঃশাসনের ন্যারেটিভ যদি মানুষ জানে, আওয়ামী লীগ কী করেছিল, এটাই তো জুলাই স্পিরিট। শহীদেরা তো শহীদ হয়েছে এই কারণে। সবাইকে বলা, এটা যেন আর না ঘটে। এটা বলতে হলে আগে জানাতে হবে কী ঘটেছিল।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে অমর একুশে গ্রন্থমেলা সরিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে ফারুকী আশ্বস্ত করে বলেন, বিষয়টি গতকালই পত্রপত্রিকায় এসেছে। আমরা এ বিষয়ে সচেতন আছি। এই মেলার সঙ্গে তিনটি মন্ত্রণালয় জড়িত। সংস্কৃতি, পূর্ত ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তিন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। কাজ শুরু করেছি আমরা। একটা পজিটিভ আলাপ চলছে। আশা করা যায়, বইমেলা যেখানে হওয়ার সেখানেই হবে। সোহরাওয়ার্দীতেই হবে, আশা করা যায়।