ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী সম্প্রতি বলেছেন যে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত পরিস্থিতি এখন খুব একটা স্বাভাবিক নয়। প্রতিদিনই দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, দিল্লি ও ঢাকা একে অপরের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী এবং কৌশলগতভাবে একে অপরের জন্য অপরিহার্য। কোনো বৈরিতা প্রদর্শন করা হলে তাতে কোনো পক্ষেরই লাভ হবে না।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কথা বলেন জেনারেল দ্বিবেদী। ভারতের ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’-এর প্রাক্কালে আয়োজিত এই বৈঠকে তিনি ভারতের সঙ্গে পাকিস্তান, চীন ও বাংলাদেশের সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, বাংলাদেশ সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারত কৌশলগতভাবে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জেনারেল দ্বিবেদী তা সমর্থন করে বলেন, “বাংলাদেশও ভারতের জন্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রতিবেশী, আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে এবং একে অপরকে বুঝতে হবে। বৈরিতা কোনো পক্ষের জন্যই মঙ্গলজনক নয়।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে যখন রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটেছিল, তখনও তিনি প্রতিবেশী দেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তারা আলোচনা করেছেন। ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও সামরিক ক্ষেত্রে দুই পক্ষের সমন্বয় অব্যাহত রয়েছে।
তবে বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের সেনাদের মধ্যে একমাত্র যৌথ মহড়া সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হলে পুনরায় যৌথ মহড়া শুরু করা হবে।
বর্তমান সময়ে সীমান্তে বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশ অভিযোগ করেছে যে, সীমান্তে পাঁচটি নির্দিষ্ট স্থানে বেড়া নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ভারত, যা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি লঙ্ঘন করে।
জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কোনো পক্ষই বিরূপ পদক্ষেপ নেয়নি। তবে উভয় দেশের মধ্যে সীমান্ত ইস্যু নিয়ে সংলাপ ও সমঝোতার প্রয়োজন রয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরে ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক তৈরি করা এবং তা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। কৌশলগত দিক থেকে দুই দেশই একে অপরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং দ্বিপাক্ষিক সমঝোতাই এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার মূল চাবিকাঠি।