স্বতন্ত্র কাউন্সিলের মাধ্যমে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ: অধ্যাদেশ জারি
উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে একটি স্বতন্ত্র কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাবনায় অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ করা হয়।
সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, “সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫” অনুযায়ী উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য একটি ছয় সদস্যবিশিষ্ট কাউন্সিল গঠন করা হবে। কাউন্সিলের নেতৃত্বে থাকবেন প্রধান বিচারপতি। এছাড়া আপিল বিভাগের দুজন বিচারক (একজন অবসরপ্রাপ্ত ও একজন কর্মরত), হাইকোর্ট বিভাগের দুজন বিচারক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল এই কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
আসিফ নজরুল বলেন, “জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল” নামক এ কমিটি সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম সংগ্রহ করবে। যে কেউ নিজে আবেদন করতে বা অন্য কারও নাম প্রস্তাব করতে পারবেন। প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে।
আইন উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন যে, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হাইকোর্টে পরবর্তী বিচারক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “বিগত সময়ে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে উচ্চ আদালতে অনেক ক্ষেত্রে অদক্ষ ও দলীয়ভাবে অনুগত ব্যক্তিদের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতো। এতে উচ্চ আদালত চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে একটি প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছিল। একজন প্রাক্তন বিচারপতির বক্তব্য অনুযায়ী, উচ্চ আদালতের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ‘প্রলয়’ ঘটে গিয়েছিল।”
অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, উচ্চ আদালতে দক্ষ, অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের বিচারক হিসেবে নিয়োগের দীর্ঘদিনের সামাজিক চাহিদা ছিল। এই নতুন আইন সেই চাহিদা পূরণ করবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন, “স্বচ্ছ ও জবাবদিহি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের ১৭ কোটি মানুষের মানবাধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতে যোগ্য ব্যক্তিদের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে।”
এই উদ্যোগ দেশের বিচারব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।